সংকটে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুট, ফেরির সংখ্যা ও সময় বাড়াতে হবে

Passenger Voice    |    ০৩:৩৩ পিএম, ২০২১-১১-২০


সংকটে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুট, ফেরির সংখ্যা ও সময় বাড়াতে হবে

শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে ফেরি চলাচলের অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে পদ্মার দক্ষিণ পারে থাকা বরিশাল-খুলনা ও ঢাকা বিভাগের ২১ জেলার মানুষ।

এর প্রভাব পড়ছে বরিশাল থেকে ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামে যাওয়ার ক্ষেত্রে পদ্মা ও মেঘনা নদীতে থাকা আরও তিনটি ফেরিঘাটে। অতিরিক্ত পথ আর সময় পেরিয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে যাত্রীরা।

স্মরণ করা যেতে পারে, এ বছরের জুলাই-আগস্টে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে পরপর চারবার পদ্মা সেতুর পিলারে ধাক্কা খায় ফেরি। এরপর এ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে বিআইডব্লিউটিসি।

চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সীমিত আকারে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এ পয়েন্টে মাত্র চারটি ফেরি এখন চলাচল করছে। ৩০ থেকে ৩৫টি ছোট গাড়ি নেওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন এ চারটি ফেরি দৈনিক ১২শ থেকে ১৩শর বেশি যানবাহন পার করতে পারছে না।

বলা বাহুল্য, পরিপূর্ণভাবে চালু থাকার সময় এ রুটে দৈনিক পারাপার হতো সাড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার যানবাহন। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে, তা দ্রুত নিরসন করতে হবে। এ রুটের সংকট প্রভাব ফেলছে অন্য কয়েকটি ঘাট পয়েন্টে।

দক্ষিণের ২১ জেলার মানুষকে দুর্ভোগ থেকে রক্ষা করতে হলে এই রুটে ফেরির সংখ্যা বাড়াতে হবে, ফেরি চলাচলের সময়ও বাড়াতে হবে। বর্তমানে এ রুটে দৈনিক ১০ ঘণ্টা ফেরি চলাচল করছে।

ফেরিসংক্রান্ত এ তো গেল এক ধরনের সমস্যা। সমস্যা আরও আছে। কিছুদিন আগে ১০টি ট্রাক ও বেশকিছু মোটরসাইকেল নিয়ে দৌলতদিয়া থেকে আসার পর পাটুরিয়া ৫ নম্বর ঘাটে এসে ডুবে যায় শাহ আমানত ফেরি।

দেশে বিভিন্ন সময়ে নানা ধরনের নৌযান ডুবির ঘটনা ঘটলেও যানবাহন বহনকারী ফেরিডুবির ঘটনা এটাই ছিল প্রথম। ফেরিটি ছিল ৪২ বছরের পুরোনো। আইন অনুযায়ী, ৪০ বছরের বেশি বয়সি নৌযানের ফিটনেস সনদ দেওয়া হয় না।

আমানত শাহ ফেরিটি চলছিল ফিটনেসবিহীনভাবে, জোড়াতালি দিয়ে। তবে শুধু এই একটি ফেরি নয়, দেশের নৌপথে চলাচলকারী বেশিরভাগ ফেরিই পুরোনো, যেগুলোর মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। এসব ফেরি ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলতে দেওয়া মোটেও সমীচীন নয়। বস্তুত গোটা ফেরি চলাচল ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করা উচিত বলে মনে করি আমরা। সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে। অথচ ফেরিব্যবস্থা রয়ে গেছে মান্ধাতার আমলের-এমনটি চলতে পারে না। নৌ কর্তৃপক্ষ এ দিকটিতে জরুরিভাবে নজর দেবে, এটাই প্রত্যাশা।